দৈনিক প্রত্যয় ডেস্কঃ যশোরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচশ’ ছাড়িয়েছে। শনিবার (২৭ জুন) ৪৪ জনের পজিটিভ রিপোর্ট আসায় শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫১০ জনে। এছাড়া এ পর্যন্ত ৮জন মারা গেছেন। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১৫৫ জন। সিভিল সার্জন অফিস এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এদিকে, শিগগিরই আইসিইউ ভেন্টিলেটর সুবিধা চালু হচ্ছে যশোর জেনারেল হাসপাতালে বলে জানা গেছে।
সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানান, সকালে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) জেনোম সেন্টারে ১২৮জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪৮ জনের ফলাফল পজেটিভ এসেছে। যার মধ্যে চারটি ফলোআপ পজেটিভ এবং নতুন পজিটিভ সংখ্যা ৪৪জন। নতুন আক্রান্তদের বর্তমান বাসস্থান লকডাউনের জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে বলা হয়েছে। দ্রুতই তা কার্যকর করা হবে।
এদিকে যবিপ্রবি জেনোম সেন্টারের পরীক্ষণ দলের সদস্য ড. শিরিন নিগার জানিয়েছেন, তারা শুক্রবার মোট ১৮৬জনের নমুনা পরীক্ষা করেন। এরমধ্যে ৫৭ জনের করোনা পজিটিভ এবং ১২৯ জনের নেগেটিভ ফলাফল এসেছে। শনিবার সকালে এই ফল সংশ্লিষ্ট জেলার সিভিল সার্জনদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, পজিটিভ আক্রান্তদের মধ্যে যশোরের ১২৮জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪৮ জনের এবং সাতক্ষীরার ৫৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৯ জনের নমুনাতে কোভিড-১৯ পজিটিভ পাওয়া গেছে।
এদিকে, শিগগিরই আইসিইউ ভেন্টিলেটর সুবিধা চালু হচ্ছে যশোর জেনারেল হাসপাতালে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ইতিমধ্যে ৬টি আইসিইউ ভেন্টিলেটর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এ প্রতিষ্ঠানটিকে। দুই একদিনের মধ্যেই যা যশোরে এসে পৌঁছাবে। কিন্তু মেশিনারিজ পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত জনবল নেই প্রতিষ্ঠানটিতে।
অবশ্য সিভিল সার্জন জানিয়েছেন, স্থানীয়ভাবে ডাক্তার ও নার্সদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে আইসিইউ চালু করা হবে এবং পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করতে জনবল চাওয়া হবে।
যশোরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ১২ এপ্রিল, এরপর বাড়তে থাকে সংখ্যা। করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। এসময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, অসংখ্য রোগী পেয়েছেন যাদের আইসিইউ সাপোর্টের প্রয়োজন। কিন্তু সে সুবিধা না থাকায় রোগীদের খুলনা ও ঢাকায় রেফার করা হচ্ছে। এ অবস্থায় রোগীদের চিকিৎসা সুবিধার্থে আইসিইউ ভেন্টিলেটর চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তাদের সে চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় ৬টি আইসিইউ ভেন্টিলেটর যশোর জেনারেল হাসপাতালের অনুকূলে বরাদ্দ দিয়েছে।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আরিফ আহমেদ বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য বিভাগের ১০টি আইসিইউ ভেন্টিলেটর চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে ঢাকার নাক কান গলা ইনস্টিটিউটের মেরামতকৃত ৬টি আইসিইউ ভেন্টিলেটর বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যা রোববার (২৮ জুন) হাতে পাওয়া যাবে। আইসিইউ ইউনিট স্থাপনের জন্য ইতিমধ্যে হাসপাতালের ৬ নং নারী সার্জারি ওয়ার্ডটি খালি করে মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দ্রুতই এটি চালু করা হবে এবং এ সংক্রান্ত প্রশিক্ষিত জনবল চেয়ে পুনরায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দেয়া হবে।
সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন বলেন, আইসিইউ না থাকায় যশোর থেকে গুরতর রোগীদের খুলনা ও ঢাকায় রেফার করা হচ্ছিল। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে যে বরাদ্দ এসেছে তাতে এ অঞ্চলের মানুষের চিকিৎসায় নতুন দ্বার উম্মোচিত হবে। বলেন, আইসিইউ চালু করতে প্রশিক্ষিত জনবলের অভাব থাকলেও স্থানীয়ভাবে ডাক্তার ও নার্সদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে আইসিইউ চালু করা হবে এবং পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করতে জনবল চাওয়া হবে।
ডিপিআর/ জাহিরুল মিলন